অনিয়ম, বণ্টন ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিয়ে যা জানাল খাদ্য অধিদপ্তর

সরকারের খাদ্য অধিদপ্তর দেশজুড়ে ৬৫০টি গুদাম এবং প্রায় ৫০ লাখ কার্ডধারীর মাধ্যমে চাল, গম ও আটা সরবরাহ করে আসছে। প্রতিটি কার্ডধারী ৩০ কেজি করে খাদ্যপণ্য পাচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) পদ্ধতি যা বাজারে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

এই প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি অসদুপায় অবলম্বন করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিম্ন পদায়ন বা বরখাস্তের মতো পদক্ষেপও রয়েছে। আজ রবিবার (৪ মে) খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এসব তথ্য জানায়।

খাদ্য অধিদপ্তরের সরবরাহ, বণ্টন ও বিপণন বিভাগের উপ-পরিচালক মো. রেজাউর রহমান রাজু বলেন, ‘সরকার ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা ৩২টি খাতে চাল, গম ও আটা বিতরণ করি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এই বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।’

অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমাদের বিধিমালায় রয়েছে যে যদি কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বা অসদুপায় অবলম্বন করে, তবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যদি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কাছ থেকে এরকম আচরণ পাওয়া যায়, তবে তাকে নিম্ন পদে পদায়ন করা হয় অথবা কখনো কখনো চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়। এটি আমাদের চলমান প্রক্রিয়া।’

রেজাউর রহমান বলেন, ‘আমরা সারা দেশে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক খাদ্য বিতরণ করে থাকি। তবে এ ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী পরিমাণ হ্রাসবৃদ্ধি হয়। প্রতিবছর মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর—এই পাঁচ মাসে খাদ্য বণ্টন কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়।’

খাদ্য বিতরণের জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এখানে কার্ডের মাধ্যমে চাল, গম ও আটা দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিটি কার্ডধারী ৩০ কেজি করে খাদ্যপণ্য পেয়ে থাকেন। সারাদেশে এই ধরনের প্রায় ৫০ লাখ কার্ড বিদ্যমান রয়েছে-তিনি যোগ করেন।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এখানে চাল-আটা বিতরণের জন্য ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) পদ্ধতিও চলমান রয়েছে। এই পদ্ধতিতে কোনো কার্ডের প্রয়োজন হয় না। সাধারণত ডিলারদের মাধ্যমে ট্রাকে করে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হয়। এখানে নির্দিষ্ট কোনো বাধ্যবাধকতা নেই; লাইন ধরেই খাদ্য নিতে হয় এবং যে আগে আসবে সে আগে পাবে। এ ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ কেজি পর্যন্ত খাদ্য নিতে পারেন। প্রথমে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হয় ডিলারদের কাছে এবং তারা সেই পণ্যগুলো ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়।

সূত্র আরও জানায়, 'হরতাল বা অবরোধের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে যা নিজস্ব প্রক্রিয়া ও ওয়ারেন্টির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ফলে দীর্ঘদিন পণ্য গুদামে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। এছাড়া, খাদ্য গুদামে সকলের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে যা জনসাধারণের জন্য প্রযোজ্য। যদিও চাল বা আটা পচনশীল দ্রব্য। সেগুলো যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি।


সর্বশেষ সংবাদ