খাদ্যসংকটে পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ ঘোষণা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:০৯ PM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৫ AM

মামলা জটিলতায় পাবনা মানসিক হাসপাতালে খাবার সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোগী ভর্তি বন্ধ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভর্তি থাকা রোগীদেরও পর্যায়ক্রমে বাড়িতে ফেরত পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কনসালট্যান্ট এবং চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে রোগী ভর্তি বন্ধ করেছে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রতন কুমার রায় স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। নতুন রোগী ভর্তি না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানসিক রোগী ও তাদের অভিভাবকরা।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আদালত হাসপাতালের টেন্ডার কার্যক্রম অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করায় রোগীদের খাবার সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হয়নি। এ ব্যাপারে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় খাবার সরবরাহ চলমান রাখা সম্ভব নয়। তাই পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলো। একই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পর্যায়ক্রমে বাড়িতে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কনসালট্যান্ট ও ওয়ার্ড ডাক্তারদের নির্দেশ প্রদান করা হলো।
হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরও কোনো সমাধান হচ্ছে না। কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও আমরা ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নতুন রোগী ভর্তি করা বন্ধ রাখছি। আমরা চাই দ্রুত বিষয়টি সমাধান হোক। ’
আরও পড়ুন: পুলিশকে প্রতিপক্ষ বানাচ্ছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে সিরাজ উদ্দিন এসেছেন মানসিক রোগী ছেলেকে নিয়ে। তিনি বলেন, ‘১০ হাজার টাকা দিয়ে মাইক্রো-বাস ভাড়া করে এসে জানতে পারলাম রোগী ভর্তি বন্ধ। অনেক চেষ্টা করে রোগী ভর্তি করতে পারলাম না, কী করব এখন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। ’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে মানসিক রোগী মেয়েকে নিয়ে আসেন মো. মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এত কষ্ট করে এসে যদি রোগী ভর্তি করতে না পারি তাহলে এর চেয়ে ভোগান্তির আর কী থাকতে পারে। ’
গ্রামের মানুষের কাছে অনুদান নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করতে এসে হতাশা নিয়ে ফিরেছেন ময়মনসিংহের আবুল হোসেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ জুন টেন্ডারে পণ্যের নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করা নিয়ে মামলা করে হাসপাতালে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোজ এন্টারপ্রাইজ। ২৯ জুন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
কমিটির প্রধান এ কে এম শফিউল আযম বলেন, ‘সরকারি বিধি অনুযায়ী বছরে ১০ লাখ টাকার বেশি খরচ করা যাবে না, সেখানে প্রতি মাসে ৫০০ রোগীকে খাওয়াতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তহবিল ব্যবহারের অনুমোদন না থাকায় বাকিতে আনা হচ্ছে খাবার। কিন্তু দোকানদাররা বাকিতে খাবার দেওয়া বন্ধ করলে রোগীদের কিভাবে খাওয়াব সে প্রশ্ন রইল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। ’
হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. আবুল বাসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমি এখন অবসরে আছি, আগে কী হয়েছে বলতে পারব না। ’