বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কীভাবে নেবেন কাজাখস্তানের সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৯ PM , আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০২:৩৮ AM

মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তান। দেশটি এশিয়ার একমাত্র দেশ, যেটি ইউরোপীয় শিক্ষাঙ্গণে পূর্ণ সদস্য হিসেবে গণ্য। বর্তমানে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কাজাখস্তানকে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, সাশ্রয়ী খরচ, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ ও শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা—এসব কারণে কাজাখস্তানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকরী ও আকর্ষণীয় শিক্ষাগত গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
ইউরাল নদীর উভয় প্রান্ত ধরে বিস্তৃত দেশটির সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বাঙ্গণে তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের সুযোগ প্রদান করে থাকে। কাজাখস্তানের সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ও এর ব্যতিক্রম নয়। নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মামুন।
উচ্চশিক্ষার জন্য কেন সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেবেন?
*ফুল-ফ্রি স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান করে;
*কাজাখস্তানের প্রথম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয় মধ্য এশিয়ার অন্যতম সেরা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত;
*বিশ্বমানের র্যাঙ্কিং QS বিশ্ব র্যাঙ্কিং অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪০৫তম স্থানে রয়েছে;
*উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা: এখানে অত্যাধুনিক গবেষণাগার, দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী ও আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা রয়েছে;
*আন্তর্জাতিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ: কাজাখস্তানে গবেষণা, ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য চমৎকার সুযোগ রয়েছে;
ভর্তিপ্রক্রিয়া ও স্কলারশিপ—
সাতবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি স্কলারশিপের মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া সাধারণত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়। এই স্কলারশিপ কাজাখস্তান সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয় ও আবেদনকারীকে নিম্নলিখিত ধাপগুলো পার করতে হয়:
১. সাইকোলজি টেস্ট: প্রথম ধাপে সাইকোলজি টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়;
২. মোটিভেশন লেটার মূল্যায়ন: টেস্টে উত্তীর্ণ হলে আবেদনকারীর মোটিভেশন লেটার পর্যালোচনা করা হয়;
৩. ইন্টারভিউ: মোটিভেশন লেটার সন্তোষজনক হলে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পাওয়া যায়;
৪. অফার লেটার: ইন্টারভিউতে সফল হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার প্রদান করা হয়;
আবেদনে প্রয়োজনীয় নথিপত্র—
*বৈধ পাসপোর্ট;
*এসএসসি ও এইচএসসি সার্টিফিকেট ও মার্কশিট;
*মেডিকেল সার্টিফিকেট;
*মোটিভেশন লেটার (অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ);
*এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস সার্টিফিকেট (যদি থাকে);
*ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ (IELTS/TOEFL-যদি থাকে);
এই স্কলারশিপের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয় না, কারণ কাজাখস্তান সরকার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ডকুমেন্ট পাঠিয়ে দেয় এবং মেইলের মাধ্যমে ফাইনাল অফার লেটার সরবরাহ করে। তবে এটি শুধু কাজাখস্তানের সরকারি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমেই প্রদান করা হয়, অন্য কোনো উৎস থেকে এই স্কলারশিপ পাওয়া যায় না।
আবেদনের যোগ্যতা—
*উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল থাকতে হবে;
*ব্যাচেলর বা মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্বের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে;
*ইংরেজি দক্ষতা প্রয়োজন: IELTS/TOEFL স্কোর থাকতে পারে (বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম অনুযায়ী);
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ—
Satbayev University ২০২৫-২৬ সালে ২০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাই, আগ্রহী শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো এবং ইংরেজি দক্ষতা রয়েছে। এ ছাড়া গবেষণায় আগ্রহীরা সহজেই এই স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা রাখেন।