আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা, বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
- রাজশাহী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৭ AM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ AM

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে নগরীর রেলগেট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে এবং তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সংঘর্ষে পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) সদস্য তোফাজ্জল হোসেনসহ চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন-মহানগর মহিলা দলের ক্রীড়া সম্পাদক লাভলী খাতুন, তার আড়াই বছরের কন্যা লামিয়া এবং রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে মহানগর মহিলা দলের নেত্রী লাভলী খাতুন ও তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু।
লাভলীর দাবি, তিনি মোস্তাক আহমেদকে ভবনে ঢুকতে দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তাকে পায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় মোস্তাকের নাম থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযানের সময় মোস্তাকের ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করা হলেও মোস্তাক পলাতক রয়েছেন।
মোস্তাক আহমেদকে না পাওয়ায় মহিলা দল নেত্রী লাভলী সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের অনুসারীরা দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। প্রতিশোধ হিসেবে লাভলীর অনুসারীরাও মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা চালায়।
সংঘর্ষ দ্রুত দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমার ব্যবহার দেখা যায়। সংঘর্ষের দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর উপস্থিতি ছিল না। তবে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভায়।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে মহিলা দল নেত্রী লাভলী অভিযোগ করেন, বিএনপিরই একটি গ্রুপ তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, গ্রেপ্তারের আগে আওয়ামী লীগ নেতার ভাই সাব্বিরকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি ফিরিয়ে দেন। এই কারণেই তার বাড়িতে হামলা হয়।
অন্যদিকে, মারুফ হোসেন জীবনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তার পক্ষ থেকে একজন জানান, সংঘর্ষের কারণ আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক নন, বরং লাভলীর পরিবারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তী সময়ে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং যৌথবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়। থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।