৭ বছর ধরে বন্ধ উসমানী উদ্যান খুলে দেওয়া হচ্ছে জুনের আগেই
- রায়হান উদ্দিন
- প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৪:১১ PM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ AM

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় রাজধানীর উসমানী উদ্যানের উন্নয়ন কাজ। এখনো ১০ মাসের কাজ সাত বছরেও শেষ হয়নি। উন্নয়ন কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ এবং চলতি বছরের জুনের আগেই খুলে দেওয়া হবে বলে জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. খায়রুল বাকের।
বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করে প্রকল্প পরিচালক মো. খায়রুল বাকের বলেন, ‘উসমানী উদ্যানের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ। গভীর নলকূপের জন্য বিদ্যুতের কাজ বাকি রয়েছে। এ কাজটি শেষ হলেই আগামী দুই মাসের মধ্যেই উদ্যানের কাজ সম্পন্ন হবে এবং জুনের আগেই উদ্যান খুলে দেওয়া যাবে।’
ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগ জানায়, ওসমানী উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত। প্রথম প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত একটি লাইব্রেরি, ফুড কোর্ট-১, ফুড কোর্ট-২, কার পার্কিং প্লেস, জিম, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড বোর্ড, এটিএম বুথ, ওষুধের দোকান, বিনোদনকেন্দ্র ও নগর জাদুঘর।
আরো পড়ুন: ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫১৮ জন
দ্বিতীয় প্যাকেজে রয়েছে শিশুদের খেলার জায়গা, ভলিবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, লেকেরপাড় উন্নয়ন, ঘাট তৈরি, মাঠ উন্নয়ন ও সাবস্টেশন স্থাপন এবং তৃতীয় প্যাকেজে ওয়াটার পিউরিফিকেশন সিস্টেম, স্বাধীনতা চত্বর ও কফিশপ, স্পিংকেল সিস্টেম, ওয়াটার রিজার্ভার স্থাপন, প্যাডল বোট, বিভিন্ন ভাস্কর্য ও পুরান ঢাকার থ্রিডি স্থাপত্য নকশার মডেল। এ ছাড়া জলাধার, আলাদা আলাদা বসার জোন করার পাশাপাশি বড় স্ক্রিনে নিজের অবস্থান দেখার ব্যবস্থা রাখা এবং নিরাপত্তার জন্য ৩৫০টি সিসি ক্যামেরা ও জিম স্থাপনের কথা।
জানা যায়, গুলিস্তান এলাকায় অবস্থিত ওসমানী উদ্যান। নগরবাসীর একটু সুশীতল ছায়া পাওয়ার পাশাপাশি কিছুটা বিনোদন বা শরীরচর্চার জন্য ২০১৭ সালে শুরু হয় এ উদ্যানের সংস্কারকাজ। ২১.৮৬ একরের উদ্যানে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে গত সাত বছরে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা খরচ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সবুজে ঘেরা এই উদ্যানের গাছ কেটে নানা অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পরিবেশবাদীরা। তবে বিগত সরকারের আমলে কোনো আপত্তি আমলে নেওয়া হয়নি। উল্টো অবকাঠামো তৈরি করতে গিয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা যুক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই উদ্যানের পেছনেই ১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন: যেদিন দেখলাম বন্ধু জজ হয়েছেন, সেদিন থেকেই আমার জীবন বদলানো শুরু
ওসমানী উদ্যানটির উন্নয়ন কাজ ২০১৭ সালের শেষ দিকে শুরু হলেও ২০১৮ সালের শুরুর দিকে ওসমানী উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অস্থায়ী প্রাচীরে ঘিরে ফেলা হয় চারদিক। ওই সময় মেয়র ছিলেন সাঈদ খোকন। উদ্বোধনের সময় ১০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও কাজ আর শেষ হয়নি। তখনকার মেয়র সাঈদ খোকন উদ্যানটির নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন। কাজ শুরুর আগেই নতুন নাম ঠিক করা হয় ‘গোসসা নিবারণী পার্ক’।
এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের দায়িত্বে আসেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তার সময়েও উদ্যানটির উন্নয়নের কাজ চলে। শুরুতে প্রায় ২২ একর জায়গার ওপর পার্কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৯০ কোটি টাকা। পরে মেয়র তাপস এসে সিদ্ধান্ত নেন ওসমানী উদ্যানের নাম পরিবর্তন করা হবে না, আগের নামই থাকবে। এখানে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে গত সাত বছরে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা খরচ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। আরো ৩০ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা ছিল। সবমিলিয়ে উদ্যানের পেছনেই ১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর প্রায় থমকে গিয়েছিল উন্নয়ন কাজ। মেয়র পালিয়ে গেলে এখানকার দায়িত্বে বসানো হয় নতুন প্রশাসক। বর্তমানেও উদ্যানটির উন্নয়নকাজ চলছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনের আগেই উদ্যানটি খুলে দেওয়া হবে বলে জানা যায়।