কম জিপিএ নিয়েও যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার স্বপ্ন পূরণ সাকিবের
- তারেক জামিল
- প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৭ AM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ AM

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের হাজারো তরুণ। এ জন্য তারা নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অনেকেই সফল হচ্ছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে স্নাতক প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শাহরিয়ার সাকিব। কম জিপিএ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের পড়ার সুযোগ পাওয়া এ তরুণ এখন সবার অনুপ্রেরণা।
সাকিব ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের পীরের চর গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি ভাঙ্গা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উত্তরা মডেল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যথাক্রমে জিপিএ ৪.৭২ ও ৪.৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নেন।
এ প্রস্তুতিকালীন তার মনে হয়, দেশের চেয়ে বাইরে পড়াশোনাটা তার জন্য বেশি অর্থবহ। কারণ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বের তুলনায় এখন অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তাই যদি দেশের বাইরে পড়াশোনা করে সে জ্ঞান দেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায় এবং দেশের কল্যাণে কাজ করা যায়, তাহলে সেটি হবে তার জীবনের সেরা কাজগুলোর একটি।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ, আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। পরীক্ষা দিয়ে স্কোর আসে ৭। যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনও করেন। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে ভিসারও অনুমোদন পান। বর্তমানে তিনি ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন।
শাহরিয়ার সাকিবের এ সাফল্যে গর্বিত ও আনন্দিত তার পরিবার। সাকিবের বাবা শওকত হোসেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ছেলের এ সাফল্যে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই খুব পরিশ্রমী। সে সব সময় পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী ছিল। অনেক বিষয়ে হতাশ ছিল, তবে দমে যায়নি। আমরা তার সাফল্যে গর্বিত। দেশবাসীর কল্যাণে যেন সে অবদান রাখতে পারে, এজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
আরো পড়ুন: জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে চাকরি, পদ ২৭, আবেদন করুন দ্রুতই
শাহরিয়ার সাকিব জানান, এ সাফল্যের পেছনে সর্বপ্রথম সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ ছিল। তাছাড়া কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং পরিবারের অনুপ্রেরণা ছিল। জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জনের মধ্যে একটি পেয়েছন তিনি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নত দেশের কারিকুলাম প্রতিস্থাপনে গবেষণা করতে চান। দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান। বাংলাদেশের কোনো শিক্ষার্থী যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে চান, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেন।
শাহরিয়ার সাকিবের এই অর্জন এখন অনেক তরুণের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করেছেন, দমিয়ে রাখা যায় না স্বপ্নকে। জিপিএ বা সিজিপিএ কম হলে কিংবা মফস্বল শহরে বসবাস করলেই একাবিংশ শতাব্দীর এই প্রযুক্তির যুগে চেষ্টা করলে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোনো স্বপ্নই পূরণ করা সম্ভব।
লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা।