তথ্য সংগ্রহকালে গণমাধ্যমকর্মীর ওপর চিকিৎসকের হামলা

গণমাধ্যমকর্মী মনিরুলকে মারধরের দৃশ্য, ইনসেটে  ডা. হাফিজুল্লাহ
গণমাধ্যমকর্মী মনিরুলকে মারধরের দৃশ্য, ইনসেটে ডা. হাফিজুল্লাহ

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী মনিরুল ইসলাম মনি। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও বেসরকারি ক্লিনিকের পরিচালক ডা. হাফিজুল্লাহর নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে। 

শনিবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে দশটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাক্তার হাফিজুল্লাহ নিয়মিতভাবে রোগীদের সরকারি হাসপাতাল থেকে তার নিজস্ব ট্রমা সেন্টারে রেফার করেন, যেখানে চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ও ট্রমা সেন্টারের পরিচালক ডা. মো. হাফিজুল্লাহ তার স্টাফদের দিয়ে  গণমাধ্যমকর্মী মনিরুল ইসলাম মনি আটকে রেখে মারধর করেন।

মনিরুল ইসলাম জানান, তারাবির নামাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ট্রমা সেন্টারে যান। সেখানে এক বৃদ্ধাকে ভ্যানে শুয়ে কাতরাতে দেখে তিনি এগিয়ে যান এবং জানতে পারেন, ওই রোগী তিন দিন ধরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও কোনো চিকিৎসা পাননি। হাসপাতালের লোকজনই তাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা সাহায্য চাইলে আমি হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক প্রবীর কুমারের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। তিনি জানান, এর আগেও ডাক্তার হাফিজুল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে এবং তাকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপর তিনি রোগীর স্বজনদের আবার সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

ওই রোগীর ছেলে ইশার আলী বলেন, আমার মা হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও চিকিৎসা পাচ্ছিলেন না। হাসপাতালের লোকজনই আমাদের ট্রমা সেন্টারে যেতে বলে। কিন্তু সাংবাদিক ভাই আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসায় ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার ও তার লোকজন তাকে মারধর করে।

রোগীর আরেক স্বজন কাজল বেগম বলেন, সাংবাদিক ভাই যখন আমাদের কথা শুনে সাহায্য করছিলেন, তখন হঠাৎ করেই ট্রমা সেন্টারের কর্মীরা তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। আমরা ঠেকাতে গেলে আমাদেরও আঘাত করা হয়।

প্রভাষক আমিনুর রহমান বলেন, আমি হঠাৎ দেখতে পাই, ডাক্তার হাফিজুল্লাহ তার কর্মচারীদের ট্রমা সেন্টারের গেট বন্ধ করতে বলেন। এরপর সাংবাদিক মনির ইসলামের ওপর কয়েকজন কর্মচারী হামলা চালায়। তথ্য সংগ্রহ করায় একজন সাংবাদিকের ওপর এমন হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ডা. মো. হাফিজুল্লাহর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিমুল হক বলেন,ঘটনার পরপরই লিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভুক্তভোগী সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ