বেগুনি ফুলকপির পাতায় দুধের চেয়ে ৫ গুণ ক্যালসিয়াম: বাকৃবি অধ্যাপক
- বাকৃবি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪০ PM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ AM

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, ‘সাধারণ ফুলকপিতে ক্যালসিয়াম থাকে। তবে বেগুনি ফুলকপির পাতায় যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে, তা গরুর দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়ামের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। এটি মানবদেহের হাড়ের গঠন, দাঁতের গঠন এবং শিশু ও বয়স্কদের দাঁতের সমস্যা অনেকাংশে দূর করবে, যদি বেগুনি ফুলকপির পাতা নিয়মিত খাওয়া যায়।’
জানা গেছে, বেগুনি ফুলকপি দেখা গেলেও বাংলাদেশে তা এখনো পুরোপুরি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। এ সবজি অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্মৃদ্ধ হওয়ায় সাধারণ ফুলকপির থেকে বেশি অ্যান্টিকার্সিনোজেনিক কম্পাউন্ড বহন করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এর ফলন, চাষাবাদ ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে এ তথ্য জানান বাকৃবি অধ্যাপক।
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বেগুনি ফুলকপির জার্মপ্লাজম আমেরিকা থেকে নিয়ে এসেছি এবং দেখার চেষ্টা করেছি, দেশের মাটি এবং আবহাওয়ায় এটি চাষ করা যায় কিনা। সফলতার সাথে আমরা এটির চাষ করতে পেরেছি। তবে বেগুনি ফুলকপির ওপর আরো গবেষণা করতে হবে এবং ভবিষ্যতে চেষ্টা করে দেখব, এ ফুলকপির বীজ উৎপাদন করা যায় কিনা।
বেগুনি ফুলকপির চাষাবাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, জৈব মালচিং পদ্ধতিতে বেগুনি ফুলকপির চাষ করা হয়েছে এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কমাতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাছি এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।
ফলন নিয়ে অধ্যাপক বলেন, জৈব মালচিং পদ্ধতিতে কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার ব্যতীত আমরা রঙিন ফুলকপি (বেগুনি) চাষের চেষ্টা করেছি। এখানে প্রতি হেক্টরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ফুলকপির গাছ রোপণ করা হয়েছে। এবার প্রতি হেক্টরে ২০ টনেরও বেশি ফলন দাড়িয়েছে, যা সাদা ফুলকপির ফলনের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
বেগুনি ফুলকপির পুষ্টিগুণ সম্মন্ধে ড.হারুন-অর-রশিদ জানান, এর রঙের কারণে এতে প্রচুর অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অ্যান্থোসায়ানিন থাকার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায় ও অ্যান্টিকার্সিনোজেনিক কম্পাউন্ড থাকার কারণে ইহা ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। পাশাপাশি ফুলকপির পাতায় অন্যান্য সবজির তুলনায় ২-৩ গুণ অধিক ফাইবার থাকে।
আরো পড়ুন: এনটিআরসিএ’র জনবল নিয়োগে দ্বৈত নীতির পরিবর্তন আসছে
ফুলকপির পাতায় আইসোথায়োসায়ানাইটস থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, এই আইসোথায়োসায়ানাইটস কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। কোনো মানুষ যদি প্রতি সপ্তাহে এক কেজির মতো ফুলকপির পাতা খেতে পারে, তাহলে তার কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অর্ধেক হ্রাস পাবে।
সাধারণ ফুলকপি পরিপক্ক হলে শক্ত হয়ে থাকে, কিন্তু বেগুনি ফুলকপি নরম এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু। এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, সাদা রঙের ফুলকপির পাতা আমরা সচরাচর খাই না, তবে বেগুনি ফুলকপির পাতা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ বিধায় ইহা শাক হিসেবে খাওয়া যেতে পারে এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু বলে জানান এ গবেষক।