জাবি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ কমাতে চালু হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি

জাবি শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি
জাবি শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অভ্যন্তরে যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ যেন কমছেই না। বিশাল এ ক্যাম্পাসে পায়ে হেঁটে সবখানে যাওয়া যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় যাতায়াতও সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভোগান্তি কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে বৈদ্যুতিক ‘কার্ট’ গাড়ি। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, মার্চ মাসে পরীক্ষামূলকভাবে কার্ট ভ্যান চালু করা হবে। আমাদের ক্যাম্পাসের ভূমি যেহেতু উঁচু-নিচু, তাই আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি গাড়ি চালু করব। 

এগুলো ৮-১০ সিটের হয় এবং পরিবেশবান্ধব জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে ইতোমধ্যে দুটি বৈদ্যুতিক গাড়ি চলে আসছে। এগুলো আমরা এক্সপেরিমেন্ট করছি। আশা করছি,  যাতায়াতের একটি স্থায়ী সমাধান হবে।’

শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হওয়ায় তাদের যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে পায়ে-চালিত রিকশা ও শাটল বাস চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ যেন কমছেই না। কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা জানান, সব সময় শাটল বাস না পাওয়ার পাশাপাশি পায়ে-চালিত রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া নেয়। ক্যাম্পাসের উঁচু-নিচু রাস্তা পায়ে-চালিত রিকশা চলাচলের অনুপযুক্ত। এসব কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

এ ছাড়া শাটল বাস চালু করা হলেও এর ফলপ্রসূ ব্যবহার হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, শাটল বাস সার্ভিসে বিশ্ববিদ্যালয়কে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এরপরও সুফল পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। 

তূর্য কীর্তনীয়া চন্দন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোরিকশা চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এখন রমজান মাস প্রচণ্ড গরম, রোজা রেখে দূরত্ব অতিক্রম করা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর। সবার চলাচলের সুবিধার জন্য ক্যাম্পাসে অটোরিকশা চালু করা প্রয়োজন। আমরা চাই, প্রশাসন আমাদের কথা শুনুক এবং ক্যাম্পাসে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দিক।

আরো পড়ুন: চাবি আনতে যাওয়া গোবিপ্রবি ছাত্রীকে অস্বাভাবিক স্পর্শ, বাড়ির মালিক আটক

গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যু হয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়। এর বিকল্প হিসেবে কোনো স্থায়ী সমাধান বের করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্থায়ী শাটল সার্ভিস চালু করার জন্য গঠিত কমিটি এখন পর্যন্ত কয়েকটি মিটিং করেছে এবং বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনা করেছে। ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় একটা কোম্পানির দুটি কার্ট গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে চালাচ্ছি। 

তিনি বলেন, যদিও অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে, আমরা আশা করছি আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে আরো তিনটি কার্ট গাড়ি যুক্ত হবে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সম্পুর্ণভাবে আমরা এই সার্ভিস চালু করতে পারব বলে আশা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ