কর্মসূচি নিয়ে আজ মাঠে নামতে চায় আ.লীগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৫ PM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ AM

আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারিয়েছে প্রায় ছয় মাস হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ দিনের কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে মাঠে নামতে চায় তারা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছে তারা।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বরের শহীদ নূর হোসেন দিবস পালন করতে দলীয় নেতাকর্মীদের আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন রাজনীতির মাঠে তেমন প্রভাব ফেরতে পারেনি সংকটে থাকা দলটি। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়নকে মাঠে ফেরার পরীক্ষা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ।
গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ট্যাঙ্গরা এলাকায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে। সরকার থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটিই ছিল দলের প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির সভা। ওই অঞ্চলে একটি বাসায় অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তার বাসাতেই স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ওয়ার্কিং কমিটির যেসব সদস্য অবস্থান করছেন, তারা প্রায় সবাই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতে থাকছেন না, এমন সদস্যরা এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে সভায় যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন : ছাত্রলীগ নেতা শোভন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
শেখ হাসিনা সভার কথা শোনেন এবং নিজে নির্দেশনা দেন। ওই বৈঠক থেকেই ফেব্রুয়ারির কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এত দিন বিদেশের মাটিতে সভা সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। বাইরে থেকে ধীরে ধীরে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দলটি। এ যাত্রায় ১৮ দিনে পাঁচ ধরনের কর্মসূচির প্রস্তাব করে দলের ওয়ার্কিং কমিটি। সহজ থেকে ধারাবাহিকভাবে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে আজ শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে জনমত গড়ে তুলতে লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ পালন করা হবে। মাঝে তিন দিন বিরতি দিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালিত হবে। এর পরের সপ্তাহে অবরোধ ও হরতাল ডাকা হয়েছে।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল পালন করবে আওয়ামী লীগ।
কর্মসূচি ঘোষণার বিবৃতিতে দলটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের এসব কর্মসূচিতে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ারও ঘোষণা দেয় দলটি।
ওয়ার্কিং কমিটির সেই বৈঠকে অংশ নেওয়াদের একজন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম থেকে কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : এনামুল হক বিজয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকানার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম আওয়ামী লীগকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না, এমন কথা জানিয়েছেন।
গত বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না।’
দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নেতারা আওয়ামী লীগের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবেন, এটি স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার প্রকোপ তুলনামূলক কিছুটা কমলেও ভয় কাটেনি। এমন পরিস্থিতিতে কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে মাঠে হামলা ও মামলার ঝুঁকি দুটোই থাকছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ যুগে যুগে গড়ে ওঠা দল। এই দল এক দিনে বড় হয়নি। কোটি কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে হৃদয়ে ধারণ করে। হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন আওয়ামী লীগ করবে।