মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে বিশ্বের প্রথম টিকার ট্রায়াল শুরু করল চীন

মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে বিশ্বের প্রথম টিকা তৈরি করেছে চীন এবং সেটির মেডিকেল ট্রায়ালও শুরু হয়েছে দেশটিতে। যদিও টিকাটির নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, এটি প্রস্তুত করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ কর্পোরেশনের (সিনোফার্ম) অধীনস্থ সাংহাই ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস (সিআইবিপি)।

চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, মঙ্গলবার (তারিখ উল্লেখ না থাকায় স্থগিত) হেনান প্রদেশের রাজধানী ঝেনঝৌয়ের হেনান ইনফেকশাস ডিজিজ হাসপাতালে টিকাটির মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়। অংশগ্রহণকারীরা সবাই ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরেই চীনের জাতীয় চিকিৎসা প্রশাসন সিআইবিপিকে এই ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়।

এক সময় বিরল বলে বিবেচিত মাঙ্কিপক্স ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার উষ্ণ ও আদ্র বনাঞ্চলের বানররা এই ভাইরাসের প্রাথমিক বাহক। পরবর্তীতে এটি মানবদেহে সংক্রমিত হতে শুরু করে।

মাঙ্কিপক্স রোগের পেছনে দায়ী ভাইরাসটি স্মলপক্স বা জলবসন্ত ভাইরাস শ্রেণিভুক্ত। ভাইরাসটির দুটি ভিন্ন ধরন রয়েছে— ক্ল্যাড-১ (মধ্য আফ্রিকান) ও ক্ল্যাড-২ (পশ্চিম আফ্রিকান)। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জন আক্রান্তের মধ্যে প্রায় ৪ জনের মৃত্যু হয়।

এই রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশিতে টান এবং প্রচণ্ড দুর্বলতা। প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বর দেখা দিলেও, দ্রুতই শরীরে ফোস্কা ও ফুসকুড়ি ওঠে, যা প্রথমে মুখে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে— বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায়।

এতদিন মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকা বা ওষুধ না থাকলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, স্মলপক্সের জন্য ব্যবহৃত টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে প্রায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর। ফলে বিকল্প হিসেবে সেই টিকাই এতদিন ব্যবহার হয়ে আসছিল।


সর্বশেষ সংবাদ