কিশোরগঞ্জে বাড়ছে ভুট্টা চাষ, বদলে যাচ্ছে হাওরের রূপ

ভুট্টা চাষে কিশোরগঞ্জের হাওরপারের মানুষের জীবন বদলে যাচ্ছে
ভুট্টা চাষে কিশোরগঞ্জের হাওরপারের মানুষের জীবন বদলে যাচ্ছে

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার চাষ। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ধান, গমের চেয়ে ভুট্টা আবাদে খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় কয়েক বছর ধরে কৃষকরা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ভুট্টা চাষ বাড়ায় বদলে যাচ্ছে হাওর এলাকায় রূপ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এ সোনালি ফসল ভুট্টা।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাওর উপজেলা মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, বাজিতপুরের মাঠে মাঠে ভুট্টার আবাদ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে৷ ভুট্টা চাষে খরচ কম৷ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। ভুট্টা থেকে মাছ ও মুরগির খাদ্য উৎপাদন এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।

মিঠামইনের গোপদিঘী ইউনিয়নের কৃষক হাসেন আলী বলেন, ‘অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি গত বছর ভুট্টা চাষ করেছিলাম। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর ভুট্টার চাষ বাড়িয়েছি। যদি ভুট্টার দাম ঠিক থাকে তাহলে এ বছরেও বেশ লাভ হবে।’

আরও পড়ুন: পাবলিক পরীক্ষার জন্য স্বতন্ত্র কেন্দ্রের সুপারিশ, কার্যকর কবে?

ইটনা হাওরের কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ভুট্টা চাষে আমাদের তিনভাবে লাভ হয়। ভুট্টা বিক্রি করা, কাঁচা পাতা গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো এবং গাছ শুকিয়ে লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।’

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে বিনা মূল্যে সার ও বীজ। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বছর জেলার ১৩ উপজেলায় ১২ হাজার ২১০ হেক্টর চাষ করা হয়েছে। জেলায় এ বছর কিশোরগঞ্জ সদর ৬০০ হেক্টর, হোসেনপুর ৬০০ হেক্টর, পাকুন্দিয়া ৬৬৫ হেক্টর, কটিয়াদি ৪০৫ হেক্টর, করিমগঞ্জ ৩৫৫ হেক্টর, তাড়াইল ৬৩ হেক্টর, ইটনা ৭২৫ হেক্টর, মিঠামইন ২৮৮৮ হেক্টর, নিকলী ৩১১০ হেক্টর, অষ্টগ্রাম ৯৮০ হেক্টর, বাজিতপুর ২০১০ হেক্টর, কুলিয়ারচর ১৩৬ হেক্টর ও ভৈরব ৯৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পরিশ্রম আর সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদই ছিল ঢাবিতে চান্স পাওয়া প্রান্তীর মূল চাবিকাঠি

তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই কৃষকদের ভুট্টা চাষে প্রণোদনা দিয়ে আসছি। ভুট্টা চাষে লাভ বেশি, খরচ কম। এ ছাড়া জমি পড়ে থাকার চেয়ে আমরা কৃষকদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী করছি। এতে তারাও অনেক বেশি লাভের মুখ দেখছেন। ভুট্টার ফলন ঘরে ওঠাতেও আমরা বিভিন্ন কাটার মেশিন তাদের বিনামূল্যে হস্তান্তর করেছি। আশাক রি এ বছরও অধিক ফলনের মুখ দেখবেন এখানকার ভুট্টাচাষিরা। এ জেলা কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সোনালি ফসল ভুট্টা।


সর্বশেষ সংবাদ