০৬ মে ২০২৫, ০৭:১৯

বরিশাল বাদে অন্যান্য পলিটেকনিকে চলছে শাটডাউন কর্মসূচি

তালা ঝুলিয়ে শাটডাউন কর্মসূচি  © সংগৃহীত

ছয় দফা দাবি আদায়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে তালা ঝুলিয়ে শাটডাউন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আওতার বাইরে থেকে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১ মে) তৃতীয় দিনের মতো অন্য পলিটেকনিকগুলোতে তালা ঝুলিয়ে শাটডাউন কর্মসূচি চলতে দেখা গেছে। 

বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আইয়ুব নবী বলেন, ‘বরিশাল পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছি না। আমরা বুধবার থেকে ক্লাস করছি। তবে আমরা পরীক্ষা ও ফরম পূরণ কর্মসূচি বর্জন করছি। ছয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পরীক্ষা ও ফরম পূরণ বর্জন করবো।’

ভিন্ন কর্মসূচি পালনের কারণে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি আন্দোলন পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিতে হয়। অপরিকল্পিতভাবে কিছুই আগায় না। আর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয় এমন কর্মসূচিতে আমরা যাচ্ছি না। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করেই আমরা ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।’
 
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের দপ্তর সম্পাদক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘পলিটেকনিকগুলোতে শাটডাউন কর্মসূচি চলছে। আমরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপরেখা প্রণয়ন না করা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। আর নতুন করে কোন কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে তা জানিয়ে দেব।’

আরো পড়ুন: কারিগরি শিক্ষকদের এপ্রিলের বেতন কবে, জানাল অধিদপ্তর

দেশের ৪৮টি সরকারি ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি চলছে বলে তথ্য তুলে ধরে সাব্বির বলেন, ‘৪৯টি সরকারি পলিটেকনিকের মধ্যে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাড়া অন্যান্যগুলোতে শাটডাউন কর্মসূচি চলছে। এছাড়া বেসরকারি পলিটেকনিকগুলোতেও এ কর্মসূচি চলছে।’

এর আগে গত দুদিনে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ, গণমিছিল এবং সব জেলার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস, বাংলাদেশের (আইডিইবি) অফিসে অভিযোগপত্র জমা দেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হল-
*জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাই কোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইন্সট্রাকটর পদবি পরিবর্তন এবং ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা। ২০২১ সালের বিতর্কিত ক্রাফট ইন্সট্রাকটর নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করা, সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে নিয়োগ বাতিল করা এবং মামলার প্রধান কারিগর ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

*ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদী অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করা।

*উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) পদে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবে না এবং এই পদ সংরক্ষিত করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছাত্রদের ন্যূনতম ১০ম গ্রেডের বেসিক অর্থাৎ ১৬ হাজার টাকা দেওয়া।

*কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিটি প্রকাশ করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, উপ-পরিচালক, অধ্যক্ষ ও দায়িত্বে থাকা সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলকে দায়িত্ব/নিয়োগ দেওয়া।

*কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত সকল নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল সকল শূন্য পদে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও দক্ষ ল্যাব সহকারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।

*ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার গেজেট পাস করতে হবে এবং বর্তমানে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নড়াইল, খাগড়াছড়ি) শতভাগ সিট নিশ্চিত করা।