রমজানে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে নানা দাবি জাবি ছাত্রদল-শিবিরের
পবিত্র রমজানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে ডাইনিং ও ক্যান্টিনে পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার সরবরাহ এবং খাবারের দোকান মনিটরিংসহ শিক্ষার্থীবান্ধব নানা দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও শাখা ছাত্রশিবির৷
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রশিবির এবং আজ রবিবার (২ মার্চ) শাখা ছাত্রদল পৃথকভাবে স্মারকলিপি আকারে তাদের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসানের কাছে প্রদান করেন৷
শাখা ছাত্রশিবির তাদের স্মারকলিপিতে ৫ দফা দাবি জানায়। তাদের দাবিগুলো হলো- আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যান্টিনে পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবারের ব্যবস্থা করা; নতুন আবাসিক হলগুলোতে গ্যাস সংযোগ নিশ্চিত করা এবং খাবারের দোকানগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতে আজান শোনা এবং পৃথক নামাজ কক্ষের ব্যবস্থা করা; ছাত্রী হলগুলোতে বন্ধ থাকা ডাইনিং ও ক্যান্টিনগুলো পুনরায় চালু করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে সার্বক্ষণিক অভিজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
শাখা ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপিতে বলা হয়, আবাসিক হলগুলোর বেশির ভাগ ডাইনিং ও ক্যান্টিনে সেহেরি ও ইফতারের ব্যবস্থা থাকে না। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পরতে হয়। তাই হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যান্টিন রমজানে খোলা রাখা ও পুষ্টিমান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ভর্তুকি বৃদ্ধি করার দাবি জানান। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের দোকানগুলোর খাবারের মান ও দাম ঠিক রাখার জন্য প্রশাসনকে ভূমিকা রাখার দাবি জানান।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা রমজানে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়গুলো তুলে ধরে উপাচার্য মহাদয়ের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। উপাচার্য স্যার আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক দাবি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মেয়েদের হলের আজানের সমস্যা দ্রুত শেষ হবে। সেইসাথে নতুন হলগুলোতে গ্যাস সমস্যা সমাধানে সিলিন্ডার স্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। স্থায়ীভাবে গ্যাস সংযোগের জন্য করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে ভিসি বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে দুইটি দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল। তাদের দাবিগুলো হলো- হলসমূহ, বটতলা ও ডেইরি গেইটের (প্রধান ফটক) খাবারের মান বৃদ্ধি ও যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে প্রশাসনিক মনিটরিং সেল গঠন করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী হল ক্যান্টিনসমূহের ভর্তুকি বৃদ্ধি।
শাখা ছাত্রদলের স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, রমজান মাসের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা চলমান থাকবে। ফলে আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান করছেন। পবিত্র রমজানে রোজাদার শিক্ষার্থীগণ সেহরি ও ইফতারে সঠিক ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্য গ্রহণ না করলে তাদের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া পবিত্র রমজানের স্পর্শকাতর ও অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে বহু শিক্ষার্থী নানাবিধ শারীরিক সমস্যা ও অসুস্থতার শিকার হবেন। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল পবিত্র রমজানে আবাসিক হলসমূহের ক্যান্টিনের খাবারের মান বৃদ্ধি ও যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে হলভিত্তিক মনিটরিং সেল গঠন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যান্টিনসমূহের ভর্তুকি বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, পবিত্র রমজানে ক্লাস পরীক্ষা থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা হলে আছে। রমজানে হলে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ থাকে খাবারের বিষয়ে। প্রায়ই শোনা যায়, মানহীন খাবারে অধিক মূল্য নেওয়া হচ্ছে৷ তাই আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য হলসমূহে পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার নিশ্চিত করা। এসব বিষয়ে প্রশাসন যাতে নিয়মিত তদারকি করে সেই দাবিতেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। এতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করছি।