২০৫ সদস্যের নতুন ছাত্রসংগঠনে জবি থেকে মাত্র ৫ জন, শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ
- জবি কন্ট্রিবিউটর
- প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৩ PM , আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০২:৩৮ AM

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ২০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পাঁচজন শিক্ষার্থী স্থান পেয়েছেন। তবে এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট নন। গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের অনুমোদিত প্যাডে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের নূরনবী ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী নাঈমা আক্তার রীতা। যুগ্ম সদস্য সচিব হয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী কিশোর আনজুম সাম্য, এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. মাহবুব মির্জা সুমন। এছাড়া, সংগঠক হয়েছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ।
তবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি সংখ্যা ও তাদের পদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে অভিযোগ করেছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান অনুযায়ী মূল নেতৃত্বে তাদের যথাযথ স্থান দেওয়া হয়নি।
জবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সিফাত হাসান সাকিব বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। আমরা আশা করেছিলাম, সেই অনুযায়ী মূল পদে আমাদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কিন্তু তা হয়নি, যা সম্পূর্ণ অন্যায্য।’
শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান বলেন, ‘এটার কী উত্তর দেওয়া উচিত জানি না। অনুষ্ঠানে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যাইনি, কারণ আগেই বুঝেছিলাম, এটি ঢাবি সিন্ডিকেটের আরেকটি ডামি কমিটি হবে।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুর রহমান আকাশ মন্তব্য করেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, কেন্দ্রীয় কমিটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আরও গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, শুধু সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।’
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়ে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই চেতনা মলিন হতে শুরু করেছে। এর প্রমাণ হলো ঢাবি কেন্দ্রিক নতুন ছাত্র সংগঠনের কমিটি, যেখানে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিপ্লবীদের নামমাত্র পদ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।’
সংগঠক নির্বাচিত হওয়া ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ গঠিত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একক আধিপত্য রয়ে গেছে, যা সারাদেশের শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে জগন্নাথসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ইনক্লুসিভ পদ তৈরি জরুরি। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নিরপেক্ষ ও নতুন ধারার ছাত্র রাজনীতি গড়ে তোলা, যেখানে লেজুড়বৃত্তির কোনো স্থান থাকবে না।’