২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:১১

শীর্ষ তিন পদে আমাকে ‘মাইনাস’ করা হয়েছে, পদত্যাগ নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস রিফাত রশিদের

রিফাত রশিদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ ২০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে। তবে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের একদিনের মধ্যেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশিদ। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের পর ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে রিফাত রশিদ তার পদত্যাগের কারণ জানিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, নতুন ছাত্র সংগঠনে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল আমি সদস্য সচিব হবো। এরপর আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে মুখ্য সংগঠক, পরবর্তীতে সেখান থেকেও সরিয়ে মুখপাত্র করার প্রস্তাবনা করে। সবশেষে সেখান থেকেও মাইনাস করে আমাকে সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব পদে আসার প্রস্তাব করে। মুখপাত্র পোস্ট পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমি কালেক্টিভ স্বার্থের কথা ভেবে মেনে নিয়েছি। যখন যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয় তখন আমি স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেই, এই ছাত্র সংগঠনে আমি থাকবো না। 

‘‘এটা জানিয়ে দেয়ার পর আর কোনো মিটিং, সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি এবং লিটারেচার টিমের কোনো কাজের সাথেই যুক্ত ছিলাম না। আমি পুরোপুরি এই সংগঠন গঠনের সমস্ত প্রসেস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম। প্রাইভেট ও মহানগর থেকে সার্চ কমিটিতে রিপ্রেজেনটেটিভ দিয়ে গিয়েছিলাম।তাদেরকে পজিট করানো আমার দায়িত্ব ছিল, আমি সেই দায়িত্ব পালন করে সরে গিয়েছি।’’ 

দীর্ঘ স্ট্যাটাসের শুরুতে তিনি লেখেন, গতকালকের ঘটনা স্পষ্ট করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। তার আগেই জানিয়ে রাখি, নতুন ছাত্রসংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই কমিটিতে আমার নাম ঘোষণা করার আগে আমার থেকে কনফারমেশন নেয়া হয়নি। দফায় দফায় আলোচনা হয়েছিল কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলত অনুমতি ব্যতীত আমার নাম কমিটিতে রাখায় আমি এই পদ থেকে সরে এসেছি। 

‘‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুরো সাংগঠনিক সেট আপ, লিডারশিপ থেকে শুরু করে বৈছাআ এর পেজকেও নতুন ছাত্র সংগঠন এর প্রোমোশনে কাজে লাগানো হয়েছে। কিন্তু বৈছাআকে একটি সংগঠন আকারে যারা এতোদিন টেনে নিয়ে গেছে তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি, তাদের অংশগ্রহণ ছিল না খুব একটা ছাত্র সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে। বিশেষত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় সহ সবার কালেক্টিভ একটি ক্ষোভ সেখানে উপস্থিত ছিল। সবার প্রশ্ন ছিল, যদি স্বতন্ত্র উদ্যোগ হয় তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' সেট আপকে কেনো ব্যবহার করা হচ্ছে ছাত্রসংগঠন নির্মাণের ক্ষেত্রে? এই প্রশ্নটাই বারবার করা হয়েছে।’’

গতকালকের মারামারির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে তিনি লেখেন, ঢাবি বলি আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বলি,যারা আহত হয়েছেন তারা আমার ভাইব্রাদার। আমি এই ঘটনার সুস্পষ্ট তদন্ত চাই। যারা জড়িত তাদের উপর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দকে। সেইসাথে যারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন আমি হামলার নির্দেশদাতা তাদেরকে বলবো সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসুন।

‘‘ঘটনার সাথে-সাথেই যখন ঢাবিতে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তখনই আমি ঢাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মুখোমুখি হতে চেয়েছিলাম। কাদের-বাকের ভাইকে কল দিয়ে তাদের রিচ করতে পারি নাই। পরে জাহিদ ভাইকে কল দিয়ে জানাই আমি ঢাবির শিক্ষার্থীদেরকে ফেইস করবো। তিনি বলেছেন, সিচুয়েশন পজিটিভ না। আগে আমরা সবাই মিলে অর্গানোগ্রাম ফোরামে আলোচনা করে নেই আমি,তারপর আসো। সেই আলাপ শেষ করতে করতে রাত প্রায় শেষ হয়ে যায়। তাই গতকাল আর শিক্ষার্থীদেরকে ব্যাখ্যা করার সুযোগ হয়নি।’’