১৯ মার্চ ২০২৫, ১৫:০০

জবি শিক্ষার্থীকে মারধর, গাবতলী লিমিটেডের ১০ বাস আটক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাখা ১০টি বাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের ১০টি বাস ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে আটকে রেখেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে যাত্রাবাড়ী থেকে বাসগুলো নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সামনে আটকে রেখে দেন তারা।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে জবি ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী কিরণ কুমার দাস কল্যাণপুরে গাবতলী ৮ নং পরিবহনের স্টাফ কর্তৃক মারধরের শিকার হন। ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং পরের দিন সকালে বাসগুলোকে আটক করেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে ১০ বাস আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে একটি বাসে ভাঙচুর করা হয়েছে। বাস চালকদের অভিযোগ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এনে বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে। 

গতকাল গুলিস্তান থেকে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার জন্যে ৮ নম্বর গাবতলী বাসে ওঠেন রবিদাস। কিন্তু যথাসময়ে বাস না ছাড়া এবং ইফতারের সময় হয়ে আসায় বাস কন্ডাক্টর ও সহকারীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় একাধিক যাত্রীর। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গেও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয় বাসচালকের। পরে বাস ছেড়ে দিলে একে একে সবাই নেমে গেলেও কল্যাণপুরে নামতে দেন না রবি দাসকে। বাসে তাকে আটকে রেখে গালিগালাজ, ডাবল ভাড়া নেওয়া ও বাস স্টাফদের জড়ো করে মারধর করা হয়। প্রাণ বাঁচানোর জন্য একটা বাইকে করে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে আসেন।

জবি শিক্ষার্থীরা বলেন, দুই দিন আগে জগন্নাথের নারী শিক্ষার্থীকে ভিক্টর ক্লাসিকের বাসে হেনস্তা করা হলো। দিন পার না হতেই আরেক বাসে মারধর করা হলো আরেক জবি শিক্ষার্থীকে। ভিক্টর ক্লাসিককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু গাবতলী বাসের লোকজন সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। আমাদের ভাই-বোনদের সঙ্গে যাতে অন্তত কোনো বাস চোখ তুলে তাকাতে না পারে, তার ব্যবস্থা করব। বিচার না করা পর্যন্ত এই বাসগুলো এখান থেকে এক পা-ও সরবে না।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কিরণ কুমার রবিদাস বলেন, আমি অন্য যাত্রীদের মতো শুধু যথাসময়ে বাস ছাড়ার কথা বলেছি। কিন্তু আমাকে আলাদাভাবে আটকে রেখে মারধর করে। আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে তারা মারল, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন তারা যেন সুষ্ঠু বিচার করে।

গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের বাসের এক সহকারী বলেন, আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা দেখি। আমাদের স্টাফদের মধ্যে যারা এই কাজ করেছে, তারা বড় ধরনের অপরাধ করেছে। তাদের মোটেও এটা করা উচিত হয়নি।

গাবতলী লিংক (প্রা.) লিমিটেডের এমডি রুবেল বলেন, আমরা গতকাল রাতেই এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাবে আমরা আসলে বুঝিনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু সমাধান করব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, আপাতত আমি কিছু বলতে পারছি না। আমার কোনো সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পছন্দ হয় না,. তাই আমি এখন কিছু বলব না। বাসমালিক কর্তৃপক্ষ আসবে, তাদের সঙ্গে বসার পর সিদ্ধান্ত হবে।