গাজায় হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জনে শিক্ষার্থীদের কী উপকার—প্রশ্ন ড্যাফোডিল শিক্ষকের
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে আন্দোলন, বিক্ষোভ আর মানববন্ধন। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মাধ্যমে এই প্রতিবাদে সংহতি জানাচ্ছেন। তবে এই প্রতিবাদের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আফতাব হোসেন।
আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ড. আফতাব লিখেছেন, ‘আমার একটা বিষয় মাথায় ঢুকছে না। বুদ্ধিহীন হয়ে যাচ্ছি দিনে দিনে। কেউ একটু বুঝতে সাহায্য করেন। গাজায় হামলা হয়েছে, ছাত্ররা প্রতিবাদ স্বরূপ ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে। এতে কার কি উপকার হবে?’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা মুসলিম জাতি সবসময় আন্দোলন আর গালাগালি না করে ভালো মতো পড়াশোনা করতে পারলে ভালো হতো না? বিশ্বদরবারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে তারপর দিতে হবে যথাযথ জবাব। করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা আর innovative... এই যেমন ফেসবুকটাও ওদের তৈরি। আমরা লেখাপড়া না করলে বিপক্ষের লাভটা কী?’
এ বিষয়ে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমাকে কয়েকজন সাংবাদিক ফোন করে বললেন আমি একথা বলতে পারি কি না। হ্যাঁ এটা আমি বলতে পারি। আজকে গাজায় হামলা হলো, আমরা কেউ (পুরো মুসলিম বিশ্ব) কোনও প্রতিবাদ বা পাল্টা কিছু করতে পারলাম না। এটা পুরো মুসলিম বিশ্বের জন্য লজ্জার। আমরা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারলাম না। এটার কারণ আমাদের শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ঘাটতি। আমরা যদি শক্তিশালী হতাম, তাহলে কি কাল রাতের এই ঘটনা ঘটতো?
তিনি বলেন, আশা করি কাল আন্দোলন হবে নিজেদের শক্তি এবং যোগ্যতা বৃদ্ধির। আমার একটা বিষয় মাথায় ঢুকছে না। বুদ্ধিহীন হয়ে যাচ্ছি দিনে দিনে। কেউ একটু বুঝতে সাহায্য করেন। গাজায় হামলা হয়েছে, ছাত্ররা প্রতিবাদ স্বরূপ ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে। এতে কার কি উপকার হবে?
তিনি আরও বলেন, আমরা মুসলিম জাতি সবসময় আন্দোলন আর গালাগালি না করে ভালো মতো পড়াশোনা করতে পারলে ভালো হতোনা? বিশ্বদরবারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে তারপর দিতে হবে যথাযথ জবাব। করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা আর innovative… এই যেমন ফেসবুকটাও ওদের তৈরি। আমরা লেখাপড়া না করলে বিপক্ষের লাভটা কি?
এদিকে একই বিভাগের প্রভাষক তাহমিনা রহমান একটি কথোপকথনে (হোয়াটসঅ্যাপ) লিখেছেন, ‘আগামীকাল যদি কেউ ক্লাস মিস দিয়ে স্ট্রাইকে যেতে চাও, যেতে পারো। আমি তাকে দুইটা অ্যাবসেন্ট দিয়ে দেব। সবাই না আসলে সবাই অ্যাবসেন্ট। আর এই টপিকে কেউ কাউন্সিলিং চাইতে আসবে না। তোমরা যদি বাজে এক্সকিউস দেখাও, তাহলে এটি একটি সতর্কবার্তা।’
জানা গেছে, ইসরায়েল পরিচালিত ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ কর্মসূচি পালন করতে আগামীকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) ক্লাস করবেন না করার সিদ্ধান্ত নেন ড্যাফোডিলের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) এ ঘোষণার পরপরই প্রভাষক তাহমিনা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না আসলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেবেন বলে জানান। এ সংক্রান্ত একটি কথপোকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।