অস্কার পেল ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:০২ PM , আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:০২ PM

ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ও ভূমি রক্ষার লড়াইকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তথ্যচিত্র ‘নো আদার ল্যান্ড’, যা সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে অস্কার জিতেছে। ইসরায়েলি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরার জন্য এই চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নো আদার ল্যান্ড’ যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি চিত্রনির্মাতারা, যা বিরল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তথ্যচিত্রটির নির্মাণকাজ চলে।
তথ্যচিত্রটি ফিলিস্তিনি মানবাধিকারকর্মী বাসেল আদরার সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তায় তার নিজ এলাকার ধ্বংসযজ্ঞ তিনি ক্যামেরাবন্দি করেন, যেখানে ইসরায়েলি প্রশাসন বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়।
পুরস্কার গ্রহণকালে বাসেল আদরা বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা বহু দশক ধরে কঠোর বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত সহিংসতার শিকার হচ্ছে, বাড়িঘর ধ্বংস করা হচ্ছে এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে।’
তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনিদের প্রতি অবিচার বন্ধ করতে এবং জাতিগত নিধন রোধে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিতে হবে।
ইসরায়েলি নির্মাতা ইউভাল আবরাহাম বলেন, ‘আমরা একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করেছি। গাজার চলমান ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা দরকার, পাশাপাশি ৭ অক্টোবর হিংস্রভাবে ছিনিয়ে নেওয়া জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে।’
তিনি ইসরায়েলি নীতির সমালোচনা করে বলেন, ‘জাতিগত আধিপত্যের পরিবর্তে রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন, যাতে উভয় সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার পায়।’
অস্কার ছাড়াও ‘নো আদার ল্যান্ড’ বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড ও তথ্যচিত্র বিভাগে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া, নিউইয়র্ক ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডেও এটি সেরা নন-ফিকশন সিনেমা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।
তথ্যচিত্রটির মূল ভিত্তি আদরার নিজস্ব ক্যামকর্ডার ফুটেজ, যেখানে ইসরায়েলি সেনাদের ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোর স্কুল ধ্বংস এবং পানির কূপ বন্ধ করার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। অস্কার জয় এই তথ্যচিত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনের মানবাধিকার লড়াইকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।