২৭ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫১

স্বপ্ন পূরণে ঈদ আনন্দ বিসর্জন হাবিপ্রবি চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের

রোজা শেষের পথে, ঈদের আনন্দ দরজায় কড়া নাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো প্রায় ফাঁকা, অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে গেছেন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে। তবে কিছু শিক্ষার্থী এখনও ক্যাম্পাসেই রয়ে গেছেন।

অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেলেও, অনেকের ক্ষেত্রে বাড়ি ফেরা যেন একপ্রকার বিলাসিতা। অ্যাকাডেমিক চাপে, পারিবারিক বাধ্যবাধকতায়, কিংবা আর্থিক সীমাবদ্ধতায় তারা থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থীরই এই সময় অ্যাকাডেমিক ইয়ার শেষের দিকে। কারো ফাইনাল পরীক্ষা শেষ, কারো মাস্টার্সের গবেষণা চলছে। তাই বাড়ি গেলে পড়াশোনার চাপ থেকে দূরে থাকতে পারবেন না, বরং বাড়তি মানসিক চাপ অনুভব করেন।

শফিক, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, “বাড়িতে গেলে আত্মীয়-স্বজন, পরিচিতরা জিজ্ঞেস করে, পড়াশোনা কবে শেষ হবে, চাকরি কী করছো—এসব নিয়ে চাপ দেয়। ক্যাম্পাসে থাকলে অন্তত নিজের মতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি।”

কেউ কেউ আর্থিক সংকটের কারণে বাড়ি যেতে পারছেন না। যাতায়াত খরচ, ঈদের কেনাকাটা—সবমিলিয়ে বাড়ি যাওয়াটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাকিবুল ইসলাম, অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, “আমার বাড়ি দক্ষিণাঞ্চলে, যেতে-আসতে প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকা লাগে। এটা আমার পরিবারের জন্য বড় খরচ। পাশাপাশি টিউশন করিয়ে চলি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, টিউশনি থেকে টাকা নিয়ে শেষদিকে বাড়ির পানে ছুটবো।

যারা বাড়ি যেতে পারেননি, তারা বন্ধুদের সঙ্গেই ঈদ উদ্‌যাপনের পরিকল্পনা করছেন। একসঙ্গে রান্না করে, গল্প করে, ভিডিওকলে পরিবারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের ঈদ কাটবে। আশেপাশের বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন ক্যাম্পাসে অবস্থান করা অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী।

প্রতিবছর এই বাস্তবতা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য নতুন নয়। অ্যাকাডেমিক চাপে, সামাজিক প্রতিক্রিয়ায়, কিংবা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতায় অনেকেই বাড়ি যেতে পারেন না।  তবে বন্ধুদের সঙ্গ, ক্যাম্পাসের চেনা পরিবেশ হয়ত কিছুটা হলেও তাদের মন খারাপ কমিয়ে দেবে। সংখ্যার তুলনায় পরিমাণটি হয়ত খুব বেশি নয়। তবুও এমন দুর্দশা জড়িত জীবন কারও না হোক।